Friday, August 9, 2024

অর্থনীতি

 ১) সমতল উর্বর জমি এবং বন

      কৃষিকার্য ও গবাদি পশু পালন।

২) খাল নদ নদী সমুদ্র 

      মাছ সংগ্রহ ও মাছের চাষ

৩) পাহাড়ি অঞ্চল

     পাহাড়ের খনিজ সম্পদ পাহাড়ের জমি চাষ 

৪) যাকাত

https://www.jugantor.com/todays-paper/features/islam-and-life/798633/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%89%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8B

৫) অন্যান্য

গণিমত,জিযিয়া,খারাজ,উশর

https://www.prothomalo.com/opinion/lgxl34c5ep


রাশিদুন খিলাফতে, যখনই নাগরিক আহত হয়েছিলেন বা কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন, তখন বেকার এবং তাদের পরিবারগুলি সরকারী কোষাগার থেকে ভাতা পেয়েছিলেন, তাদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হয়েছে তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

https://web.archive.org/web/20030901100155/http://www.renaissance.com.pk/Augvipo2y3.html


অর্থনীতিতে সফল সমৃদ্ধি পেতে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) দিলেন ১০ দফা। এই ১০ দফা অনুযায়ী বিশ্বের অর্থনীতি সাজাতে পারলে, বিশ্ব পাবে অর্থনীতি সুসজ্জিত নতুন এক মাত্রা। হবে সমৃদ্ধিতে আলোকিত। মানুষ পাবে শাসন-শোষণ থেকে মুক্তি। দারিদ্র্য থেকে মুক্তি। 

১০ দফা হলো—

১. হালাল উপায়ে উপার্জন ও হারাম পথ বর্জন। 

২. সুদ উচ্ছেদ। 

৩. ব্যবসায়িক অসাধুতা উচ্ছেদ। 

৪. জাকাত ব্যবস্থার প্রবর্তন। 

৫. বায়তুল মাল প্রতিষ্ঠা। 

৬. মানবিক শ্রমনীতির প্রবর্তন। 

৭. ওশরের প্রবর্তন ও ভূমিস্বত্ব ব্যবস্থার ইসলামীকরণ। 

৮. উত্তরাধিকার ব্যবস্থার যৌক্তিক রূপদান। 

৯. রাষ্ট্রের ন্যায়সংগত হস্তক্ষেপ বিধান। 

১০. নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন।



Monday, April 1, 2024

ক্লাসিক্যাল অর্থনীতি - Classical Economics

ক্লাসিক্যাল অর্থনীতি, প্রাথমিকভাবে ব্রিটেনে ১৮ শতকের শেষের দিকে এবং ১৯ শতকের গোড়ার দিকে বিকশিত হয়েছিল। এর প্রধান চিন্তাবিদরা হলেন 

অ্যাডাম স্মিথ,
জঁ-ব্যাপটিস্ট সে,
ডেভিড রিকার্ডো,
থমাস রবার্ট ম্যালথাস
এবং জন স্টুয়ার্ট মিল।
 
এই অর্থনীতিবিদরা মূলত স্ব-নিয়ন্ত্রক সিস্টেম হিসাবে বাজার অর্থনীতির একটি তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন, যা উৎপাদন ও বিনিময়ের প্রাকৃতিক আইন দ্বারা পরিচালিত হয় (বিখ্যাতভাবে অ্যাডাম স্মিথের অদৃশ্য হাতের রূপক দ্বারা ধরা পড়ে)।


১৭৭৬ সালে অ্যাডাম স্মিথের দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস সাধারণত ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির সূচনা হিসাবে বিবেচিত হয়। স্মিথের বইয়ে মৌলিক বার্তা ছিল যে, যে কোন জাতির সম্পদ রাজার কোষাগারের স্বর্ণ দ্বারা নির্ধারিত হয় না, বরং তার জাতীয় আয় দ্বারা নির্ধারিত হয়। এই আয়টি তার অধিবাসীদের শ্রমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল, শ্রম বিভাজন এবং সঞ্চিত মূলধনের ব্যবহার দ্বারা দক্ষতার সাথে সংগঠিত হয়েছিল, যা ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির কেন্দ্রীয় ধারণাগুলির মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। অর্থনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে, ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদরা বাস্তববাদী উদারপন্থী ছিলেন, বাজারের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন, যদিও তারা সাধারণ ভালর জন্য রাষ্ট্রের ভূমিকা দেখেছিলেন। স্মিথ স্বীকার করেছেন যে এমন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাজারটি সাধারণ স্বার্থকে পরিবেশন করার সর্বোত্তম উপায় নয়, এবং তিনি এটি একটি প্রদত্ত হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন যে সাধারণ ভালকে সমর্থন করে এমন ব্যয়ের বৃহত্তর অনুপাতটি তাদের সামর্থ্যের জন্য সর্বোত্তমভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের দ্বারা বহন করা উচিত। তিনি একাধিপত্যের বিপদ সম্পর্কে বারবার সতর্ক করেছিলেন এবং প্রতিযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদরা মুক্ত বাণিজ্যের সমর্থক ছিলেন, যা তাদের বাণিজ্যিক পূর্বসূরীদের থেকে তাদের আলাদা করে, যারা সংরক্ষণবাদের পক্ষে ছিলেন।


স্মিথ, রিকার্ডো এবং কিছু পূর্ববর্তী অর্থনীতিবিদকে "ক্লাসিক্যাল" হিসাবে উপাধিটি একটি অনুশাসনের কারণে যা কার্ল মার্কসের রাজনৈতিক অর্থনীতির সমালোচনা থেকে উদ্ভূত হয়, যেখানে তিনি তাদের "অশ্লীল" উত্তরাধিকারীদের বিপরীতে কমপক্ষে তাদের সাথে মোকাবিলা করার যোগ্য বলে মনে করেন এমন সমালোচনা করেছিলেন। ক্লাসিক্যাল অর্থনীতি শব্দটি দ্বারা আচ্ছাদিত কী তা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে, বিশেষত যখন ১৮৩০ থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত সময়কাল এবং শাস্ত্রীয় অর্থনীতি কীভাবে নব্যতাত্ত্বিক অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত।






 অ্যাডাম স্মিথ: অর্থনীতির জনক

প্রায় আড়াইশ বছর আগের কথা। স্কটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ লিখেছিলেন,

বাইবেল অব ক্যাপিটালিজম,
দ্য ওয়েলথ অব নেশনস-

এর মতো বই, যা তাকে আধুনিক অর্থনীতির জনক হিসেবে পরিচিত করে তোলে।

বায়োগ্রাফি ডটকম ওয়েবসাইটে ‘অ্যাডাম স্মিথ বায়োগ্রাফি’ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,স্কটল্যান্ডে তার জন্ম আনুমানিক ১৭২৩ সালে। জন্মের দুই মাস পরেই স্মিথ অনাথ হয়ে যান। তিনি ছিলেন একাধারে দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, পণ্ডিত, অর্থনীতিবিদ, রাজনৈতিক বিজ্ঞানী।    


শিক্ষাজীবনে স্মিথ স্কটল্যান্ডে তখনকার বিখ্যাত এক স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ল্যাটিন ভাষা, গণিত, ইতিহাস এবং সাহিত্য বিষয়ে পড়েন। আর ১৪ বছর বয়সে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৭ বছর বয়সে অক্সফোর্ডে পড়তে যান।  


স্মিথ ১৭৪৮ সালে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজনীন সিরিজ বক্তৃতা শুরু করেন। এই বক্তৃতার মাধ্যমে, ১৭৫০ সালে তিনি পরিচিত হন এবং বন্ধু হয়ে ওঠেন স্কটল্যান্ডের দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ ডেভিড হিউমের সঙ্গে। এই সম্পর্ক স্মিথকে ১৭৫১ সালে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিতে কাজ করার সুযোগ করে দেয়।


অ্যাডাম স্মিথ সমসাময়িক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উপর নয় বছর পরিশ্রমের পর ১৭৭৬ সালে রচনা করেন প্রকৃতি এবং কারণসমূহ নিয়ে অনুসন্ধানমূলক বই 'ওয়েলথ অব নেশনস'। যেটিকে বিবেচনা করা হয় রাজনৈতিক অর্থনীতি চর্চায় প্রথম কোনো রচনা হিসেবে।


তাছাড়া ওই সময়, ওয়েলথ অব নেশনসের রচনা স্মিথকে সুদূরপ্রসারী খ্যাতি এনে দেয়। তার রচিত এই বইটি শাস্ত্রীয় অর্থনীতির মূল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী একটি বইয়ের তকমা পায়.


তৎকালীন অর্থনীতি এমন ছিল যে, একটি দেশের জাতীয় সম্পদ পরিমাপ করা হতো দেশে সংরক্ষিত সোনা এবং রূপার ভিত্তিতে। স্মিথ প্রস্তাব করেন, জাতীয় সম্পদকে এভাবে বিচার করা উচিত নয়, বরং একটি দেশের মোট উৎপাদন ও মোট বাণিজ্যের ওপর নির্ভর করা উচিত যাকে এখন আমরা জিডিপি বা গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট বলি।  


তিনি শ্রমিকদের অর্থবণ্টন বিভাজন তত্ত্বেরও প্রবক্তা। এর মাধ্যমে বিশেষভাবে গুণগত মান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। 


স্মিথের ধারণা, মূলত শিল্প বিপ্লবের প্রারম্ভের একটি অর্থনৈতিক প্রতিফলন এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতি সমাজের জন্য সবচেয়ে ফলদায়ক এবং উপকারী। স্বতন্ত্র স্বার্থের উপর ভিত্তি করে একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তিনি তার যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেন যা ‘অদৃশ্য হাত’ দিয়ে পরিচালিত হয় এবং সবার জন্য সবচেয়ে ভালো। 


১৭৫৯ সালে স্মিথ রচনা করেন 'দ্যা থিওরি অব মোরাল সেন্টিমেন্টস'। যেটির প্রধান যুক্তি হলো মানব নৈতিকতা ব্যক্তি ও সমাজের অন্য সদস্যদের সহানুভূতির ওপর নির্ভর করে। এই বই তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌছে দেয়। তিনি ফ্রান্স ভ্রমণের সময় দেখা পান সে সময়ের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন এবং ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ টুরগটের সঙ্গে।  


অর্থনীতির বাইরেও বিচিত্র বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন স্মিথ। যার মধ্যে আছে ‘এসে অন ফিলোসোফিক্যাল সাবজেক্ট, হিস্ট্রি অব অ্যাস্ট্রনমি এনসেন্ট ফিজিক্স, মেটাফিজিক্স, লেকচার অন জুরিস প্রুডেন্স, লেকচার অন জাস্টিস, পুলিশ, রেভেনিউ ও আর্মসের মতো বিষয়।


১৭৮৭ সালে স্মিথ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন এবং এর ঠিক তিন বছরের মাথায় ১৭৯০ সালের ১৭ জুলাই ৬৭ বছর বয়সে মারা যান।

Friday, October 27, 2023

কথা

 কথা ও শুনতে পাওয়া দেখা যায় না।

Sunday, May 28, 2023

শিক্ষকবৃন্দের জন্ম ও মৃত্যু

শিক্ষকবৃন্দের জন্ম ও মৃত্যু


শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন 

জন্ম : ২৯ ডিসেম্বর ১৯১৪ মৃত্যু : ২৮ মে ১৯৭৬


শিল্পী আনোয়ারুল হক

জন্ম : ১৯১৮ মৃত্যু : ১৯৮১


শিল্পী কামরুল হাসান

জন্ম : ০২ ডিসেম্বর ১৯২১ মৃত্যু : ০২ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৮


শিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদ 

জন্ম : ২৩ জুন ১৯২২ মৃত্যু : ২০ মে ২০১২


শিল্পী সফিকুল আমীন 

জন্ম : ১৯১২ মৃত্যু : ২৮ ফেব্রæয়ারি ২০১১


শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া 

জন্ম : ০১ জানুয়ারি ১৯২৯ মৃত্যু : ০৭ জুন ২০১১


শিল্পী এ টি এম কাইয়ুম চৌধুরী

জন্ম : ০৯ মার্চ ১৯৩২ মৃত্যু : ৩০ নভেম্বর ২০১৪


শিল্পী জুনাবুল ইসলাম

জন্ম : ৯ মার্চ ১৯৩২ মৃত্যু : ১৯৯৭


শিল্পী কাজী আব্দুল বাসেত

জন্ম : ১৯৩৫ মৃত্যু : ২০০২


শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক

জন্ম : ১৯৩২ মৃত্যু : ২৩ অক্টোবর ২০০৫



শিল্পী মীর মোস্তফা আলী

জন্ম : ১৯৩২ মৃত্যু : ৫ জানুয়ারি ২০১৭


শিল্পী আমিনুল ইসলাম

জন্ম : ৭ নভেম্বর ১৯৩১ মৃত্যু : ৮ জুলাই ২০১১


শিল্পী আবু সাঈদ তালুকদার

জন্ম : ১৯৪৫ মৃত্যু : ১১ মার্চ ২০০৫


শিল্পী মরণ চাঁদ পাল

জন্ম : ৪ সেপ্টম্বর ১৯৪৫ মৃত্যু : ৬ মার্চ ২০১৩


শিল্পী মাহমুদুল হক

জন্ম : ১৯৪৫ মৃত্যু : ১১ জানুয়ারি ২০২২


শিল্পী মাহবুবুল আমিন

১৯৪৮ - ২০০১


শিল্পী শামীম আরা সিকদার

জন্ম : ২২ অক্টোবর ১৯৫২ মৃত্যু : ২৩ মার্চ ২০২৩

১৯৫২ সালরে ২২ অক্টোবর বগুড়ার মহাস্থান গড়রে চিংগাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করনে।


শিল্পী গোপেশ মালাকার

জন্ম : ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯২৮ মৃত্যু : ১৯ এপ্রিল ২০২৩




Friday, March 24, 2023

সলাতের নিষিদ্ধ সময়

 حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي قَالَ، أَخْبَرَنِي ابْنُ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لاَ تَحَرَّوْا بِصَلاَتِكُمْ طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلاَ غُرُوبَهَا ‏"‏‏.‏ وَقَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلاَةَ حَتَّى تَرْتَفِعَ، وَإِذَا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَأَخِّرُوا الصَّلاَةَ حَتَّى تَغِيبَ ‏"‏‏.‏ تَابَعَهُ عَبْدَةُ‏.‏


ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের ইচ্ছা করো না।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৮২

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD




حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ خُبَيْبٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَتَيْنِ بَعْدَ الْفَجْرِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ‏.‏


আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফজরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য ডুবা পর্যন্ত।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৮৮

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD




حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، سَمِعْتُ قَزَعَةَ، مَوْلَى زِيَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ يُحَدِّثُ بِأَرْبَعٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَعْجَبْنَنِي وَآنَقْنَنِي قَالَ ‏ "‏ لاَ تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ يَوْمَيْنِ إِلاَّ مَعَهَا زَوْجُهَا أَوْ ذُو مَحْرَمٍ‏.‏ وَلاَ صَوْمَ فِي يَوْمَيْنِ الْفِطْرِ وَالأَضْحَى، وَلاَ صَلاَةَ بَعْدَ صَلاَتَيْنِ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ، وَلاَ تُشَدُّ الرِّحَالُ إِلاَّ إِلَى ثَلاَثَةِ مَسَاجِدَ مَسْجِدِ الْحَرَامِ وَمَسْجِدِ الأَقْصَى وَمَسْجِدِي ‏"‏‏.‏


যিয়াদের আযাদকৃত দাস কাযা‘আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে চারটি বিষয় বর্ণনা করতে শুনেছি, যা আমাকে আনন্দিত ও মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেনঃ নারীগণ স্বামী কিংবা মাহ্‌রাম [১] ব্যতীত দু’দিনের দূরত্বের পথে সফর করবে না। ‘ঈদুল ফিত্‌র ও ‘ঈদুল আযহার দিনগুলোতে সিয়াম নেই। দু’ (ফরজ) সালাতের পর কোন (নফল ও সুন্নাত) সালাত নেই। ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এবং ১. মসজিদুল হারাম ২. মসজিদুল আক্‌সা এবং ৩. আমার মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে (যিয়ারতের উদ্দেশে) হাওদা বাঁধা যাবে না। (সফর করা যাবে না)।

ফুটনোটঃ

[১] মাহরামঃ স্থায়ীভাবে বিবাহ করা হারাম এমন সম্পর্কযুক্ত পুরূষ যেমন-দাদা,বাবা,ভাই,ভাতীজা,মামা,চাচা,শুশুর ইত্যাদি। 

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১১৯৭

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD




حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلاَةَ حَتَّى تَبْرُزَ، وَإِذَا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلاَةَ حَتَّى تَغِيبَ ‏"‏‏.‏ ‏"‏ وَلاَ تَحَيَّنُوا بِصَلاَتِكُمْ طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلاَ غُرُوبَهَا، فَإِنَّهَا تَطْلُعُ بَيْنَ قَرْنَىْ شَيْطَانٍ ‏"‏‏.‏ أَوِ الشَّيْطَانِ‏.‏ لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَ هِشَامٌ‏.‏


ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন সূর্যের এক কিনারা উদিত হবে, তখন তা পরিষ্কারভাবে উদিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা সালাত আদায় বন্ধ রাখ। আবার যখন সূর্যের এক কিনারা অস্ত যাবে তখন তা সম্পূর্ণ অস্ত না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা সালাত আদায় বন্ধ রাখ।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২৭২

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD




বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ:

আর তোমরা সূর্যোদয়ের সময়কে এবং সূর্যাস্তের সময়কে তোমাদের সালাতের জন্য নির্ধারিত করো না। কেননা তা শয়তানের দু’ শিং-এর মাঝখান দিয়ে উদিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, হিশাম (রহ.) ‘শয়তান’ বলেছেন না ‘আশ-শয়তান’ বলেছেন তা আমি জানি না। 

(মুসলিম ৬/৫১ হাঃ ৮২৯, আহমাদ ৪৬১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩০৪১ শেষাংশ)

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২৭৩

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD

Tuesday, March 14, 2023

নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, কছর নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজ শিক্ষা, namaz porar niom


 Table of Contents - সূচিপত্র



১. সালাত শব্দের অর্থ কি

২. নামাজ বা সালাতের বিধান

৩. সালাতের গুরুত্ব

৪. নামাজের ফজিলত সমূহ

৫. সালাতের শর্তাবলী

৬. নামাজের ফরজ কয়টি

(১) কিয়াম বা দাঁড়ানো

(২) তাকবীরে তাহরীমা

(৩) সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা

(৪) রুকু করা

(৫) সিজদা করা

(৬) তাদীলে আরকান বা ধীর-স্থির ভাবে নামাজ আদায় করা

(৭) কাদায়ে আখিরাহ বা শেষ বৈঠক


৭. নামাজের ওয়াজিব কয়টি

৮. নামাজের সুন্নত কয়টি

৯. নামাজ ভঙ্গের কারণ

১০. নামাজ কত রাকাত

(১) ফজরের নামাজ কয় রাকাত

(২) যোহরের নামাজ কয় রাকাত

(৩) আসরের নামাজ কত রাকাত

(৪) মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত

(৫) এশার নামাজ কয় রাকাত


১১. নামাজের ওয়াক্ত সমূহ

(১) ফজর

(২) যোহর

(৩) আছর

(৪) মাগরিব

(৫) এশা


১২. নামাজের নিষিদ্ধ সময়

১৩. নামাজের নিষিদ্ধ স্থান

১৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস

১৪.১. নিয়ত

১৪.২. তাকবীরে তাহরীমা

১৪.৩. ছানা

১৪.৪. সূরায়ে ফাতিহা পাঠ

১৪.৫. কিরাআত

১৪.৬. রুকু

১৪.৭. কওমা

১৪.৮. সিজদা

১৪.৯. বৈঠক

১৪.১০. সালাম

১৪.১১. নামাজের দোয়া সমূহ

১৪.১২. মাসবুকের নামাজ

১৪.১৩. কাযা নামাজ

১৪.১৪. কছর নামাজ পড়ার নিয়ম

১৫. তারাবীহ নামাজ

১৬. তাহাজ্জুদ নামাজ

১৭. ঈদের নামাজ


১. সালাত শব্দের অর্থ কি

সালাত এর আভিধানিক অর্থ দোআ, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে শরিয়ত নির্দেশিত ক্রিয়া-পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহর নিকট বান্দার ক্ষমা ভিক্ষা ও প্রার্থনা নিবেদনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদতকে সালাত বা নামাজ বলা হয়, যা তাকবীরে তাহরীমা দ্বারা শুরু হয় ও সালাম দ্বারা শেষ হয়।


আবু দাউদ, তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৩১২ ‘পবিত্রতা অধ্যায়-৩; মুসলিম, মিশকাত হা/৭৯১ ছালাত অধ্যায়-৪,‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০।


 ২. নামাজ বা সালাতের বিধান

নবুয়ত প্রাপ্তির পর থেকেই নামাজ ফরজ হয়। তবে তখন নামাজ ছিল কেবল ফজর ও আছরে দু’ দু’ রাকাত করে (কুরতুবী)। যেমন আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,আপনি আপনার প্রভুর প্রশংসা জ্ঞাপন করুন সূর্যাস্তের পূর্বে ও সূর্যোদয়ের পূর্বে। (গাফির/মুমিন ৪০/৫৫; মিরআত ২/২৬৯)


আয়েশা (রাঃ) বলেন, শুরুতে নামাজ বাড়ীতে ও সফরে ছিল দু’ দু’ রাকাত করে। 


মুসলিম হা/৬৮৫; আবুদাউদ হা/১১৯৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২১১।


 এছাড়া রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য অতিরিক্ত ছিল তাহাজ্জুদের নামাজ (ইসরা/বনু ইসরাঈল ১৭/৭৯)। সেই সাথে সাহাবীগণও নিয়মিতভাবে রাত্রির নফল নামাজ আদায় করতেন। 


মুযযাম্মিল ৭৩/২০; তাফসীরে কুরতুবী


 মিরাজের রাত্রিতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়।


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৬২-৬৫ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়-২৯, ‘মিরাজ’ অনুচ্ছেদ-৬।


উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হল- ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব ও এশা। 


আবু দাউদ হা/৩৯১, ৩৯৩ ছালাত অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-১।


এছাড়া রয়েছে জুম’আর ফরয ছালাত, যা সপ্তাহে একদিন শুক্রবার দুপুরে পড়তে হয়।


জুমা ৬২/৯; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৫৪, ‘জুম’আ অনুচ্ছেদ-৪২


ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২২৭।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৩. সালাতের গুরুত্ব

১) কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করার পরেই ইসলামে সালাতের স্থান।


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৭২ যাকাত’ অধ্যায়-৬, পরিচ্ছেদ-১


২) নামাজ ইসলামের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত, যা মিরাজের রাত্রিতে ফরয হয়।


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৬২-৬৫ ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়-২৯, মিরাজ অনুচ্ছেদ-৬


৩) নামাজ ইসলামের প্রধান স্তম্ভ যা ব্যতীত ইসলাম টিকে থাকতে পারে না।


আহমাদ, তিরমিযি, মিশকাত হাদিস নং ২৯ ঈমান অধ্যায়


৪) ছালাত একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা ৭ বছর বয়স থেকেই আদায়ের অভ্যাস করতে হয়।


আবু দাউদ হা/২৪৭, মিশকাত হা/৫৭২ ছালাত’ অধ্যায়-৪, পরিচ্ছেদ-২


৫) সালাতের বিধ্বস্তি জাতির বিধ্বস্তি হিসেবে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। 


মারইয়াম ১৯/৫৯ 


৬) পবিত্র কুরআনে সর্বাধিক বার আলোচিত বিষয় হল ছালাত।


কুরআনে অন্যূন ৮২ জায়গায় সালাতের আলোচনা এসেছে।


৭) মুমিনের জন্য সর্বাবস্থায় পালনীয় ফরজ হল নামাজ, যা অন্য ইবাদতের বেলায় হয়নি। 


বাক্বারা ২/২৩৮-৩৯; নিসা ৪/১০১-০৩।


৮) ইসলামের প্রথম যে রশি ছিন্ন হবে, তা হল তার শাসন ব্যবস্থা এবং সর্বশেষ যে রশি ছিন্ন হবে তা হল ছালাত।

আহমাদ, সহীহ ইবনে হিব্বান; আলবানী, সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫৬৯; আলবানী, সহীহ জামে ছাগীর হা/৫০৭৫, ৫৪৭৮।


৯) দুনিয়া থেকে ‘নামাজ’ বিদায় নেবার পরেই কিয়ামত হবে। 


আহমাদ, সহীহ ইবনে হিব্বান; আলবানী, সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৫৬৯; আলবানী, সহীহ জামে ছাগীর হা/৫০৭৫, ৫৪৭৮।


১০) কিয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে তার সালাতের। সালাতের হিসাব সঠিক হলে তার সমস্ত আমল সঠিক হবে। আর সালাতের হিসাব বেঠিক হলে তার সমস্ত আমল বরবাদ হবে। 


তাবারানী আওসাত, সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৩৬৯, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩৫৮; আবুদাউদ হা/৮৬৪-৬৬; নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৩০ সালাতুত তাসবীহ’ অনুচ্ছেদ-৪০। 


১১) দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত হিসেবে সালাতকে ফরজ করা হয়েছে, যা অন্য কোন ফরজ ইবাদতের বেলায় করা হয়নি। 


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৬২-৬৫ ‘মিরাজ’ অনুচ্ছেদ; নিসা ৪/১০৩।


১২) মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হল নামাজ। ( মুসলিম হাদিস নং ১৩৪)


১৩) জাহান্নামী ব্যক্তির লক্ষণ এই যে, সে নামাজ বিনষ্ট করে এবং প্রবৃত্তির পূজারী হয় (মারইয়াম ১৯/৫৯)। 


১৪) ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহর নিকট নিজের জন্য ও নিজ সন্তানদের জন্য নামাজ কায়েমকারী হওয়ার প্রার্থনা করেছিলেন (ইবরাহীম ১৪/৪০)। 


১৫) মৃত্যুকালে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সর্বশেষ অসিয়ত ছিল ‘নামাজ ও নারী জাতি সম্পর্কে। (ইবনে মাজাহ হাদিস নং ২৬৯৮)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৪. নামাজের ফজিলত সমূহ

(১) আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনকে নির্লজ্জ ও অপসন্দনীয় কাজ সমূহ হতে বিরত রাখে। (আনকাবুত ২৯/৪৫)। 


আবুল আলিয়াহ বলেন, তিনটি বস্তু না থাকলে তাকে নামাজ বলা যায় না। 


(ক) ইখলাছ বা একনিষ্ঠতা, যা তাকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় 


(খ) আল্লাহ ভীতি, যা তাকে অন্যায় থেকে বিরত রাখে 


(গ) কুরআন পাঠ, যা তাকে ভাল-মন্দের নির্দেশনা দেয়। 


আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলল যে, অমুক ব্যক্তি রাতে (তাহাজ্জুদের) নামাজ পড়ে। অতঃপর সকালে চুরি করে। জবাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বলেন, তার রাত্রি জাগরণ সত্বর তাকে ঐ কাজ থেকে বিরত রাখবে, যা তুমি বলছ। (আহমাদ হাদিস নং ৯৭৭৭)


(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা হতে পরবর্তী জুমা এবং এক রামাযান হতে পরবর্তী রমজানের মধ্যকার যাবতীয় (সগীরা) গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, যদি সে কবিরা গুনাহ সমূহ হতে বিরত থাকে (যা তওবা ব্যতীত মাফ হয় না)। (মিশকাত হাদীস নং ৫৬৪)


(৩) তিনি বলেন, তােমাদের কারু ঘরের সম্মুখ দিয়ে প্রবাহিত নদীতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করলে তোমাদের দেহে কোন ময়লা বাকী থাকে কি? পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের তুলনা ঠিক অনুরূপ। আল্লাহ এর দ্বারা গুনাহ সমূহ বিদূরিত করেন। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৬৫)


(৪) তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি সালাতের হেফাজত করল, ছালাত তার জন্য কিয়ামতের দিন নূর, দলিল ও নাজাতের কারণ হবে। (আহমাদ হা/৬৫৭৬)


(৫) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন যে, বান্দা যখন সালাতে দণ্ডায়মান হয়, তখন তার সমস্ত গুনাহ হাযির করা হয়। অতঃপর তা তার মাথায় ও দুই স্কন্ধে রেখে দেওয়া হয়। এরপর সে ব্যক্তি যখন রুকু বা সিজদায় গমন করে, তখন গুনাহ সমুহ ঝরে পড়ে। (ত্বাবারাণী, বায়হাক্বী, আলবানী, সহীহুল জামে হা/১৬৭১)


(৬) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, 

(ক) যে ব্যক্তি ফজর ও আছরের ছালাত নিয়মিত আদায় করে, সে জাহান্নামে যাবে না। সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত হা/৬২৪-২৫)


(খ) দিবস ও রাত্রির ফেরেশতারা ফজর ও আসরের সালাতের সময় একত্রিত হয়। রাতের ফেরেশতারা আসমানে উঠে গেলে আল্লাহ তাদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা আমার বান্দাদের কি অবস্থায় রেখে এলে? যদিও তিনি সবকিছু অবগত। তখন ফেরেশতারা বলে যে, আমরা তাদেরকে পেয়েছিলাম (আছরের) ছালাত অবস্থায় এবং ছেড়ে এসেছি (ফজরের) নামাজ অবস্থায়। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬২৬)। কুরআনে ফজরের সালাতকে ‘মাশহুদ’ বলা হয়েছে। (ইসরা ১৭/৭৮)। অর্থাৎ ঐ সময় ফেরেশতা বদলের কারণে রাতের ও দিনের ফেরেশতারা একত্রিত হয়ে সাক্ষী হয়ে যায়। (তিরমিযী, মিশকাত হা/৬৩৫)


(গ) যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত আদায় করল, সে আল্লাহর জিম্মায় রইল। যদি কেউ সেই জিম্মা থেকে কাউকে ছাড়িয়ে নিতে চায়, তাকে উপুড় অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (মুসলিম, মিশকাত হা/৬২৭)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

(৭) তিনি বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেগুলিকে আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের উপর ফরয করেছেন,

যে ব্যক্তি এগুলির জন্য সুন্দরভাবে ওযু করবে, ওয়াক্ত মোতাবেক নামাজ আদায় করবে, রুকু ও খুশূ-খুযু পূর্ণ করবে, তাকে ক্ষমা করার জন্য আল্লাহর অঙ্গীকার রয়েছে। আর যে ব্যক্তি এগুলো করবে না, তার জন্য আল্লাহর কোন অঙ্গীকার নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমা করতে পারেন, ইচ্ছে করলে আযাব দিতে পারেন। (আহমাদ, আবু দাউদ, মালেক, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫৭০)


(৮) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন যে, আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন প্রিয় বান্দার সাথে দুশমনী করলো, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। আমি যেসব বিষয় ফরজ করেছি, তার মাধ্যমে আমার নৈকট্য অনুসন্ধানের চেয়ে প্রিয়তর আমার নিকটে আর কিছু নেই। বান্দা বিভিন্ন নফল ইবাদতের মাধ্যমে সর্বদা আমার নৈকট্য হাসিলের চেষ্টায় থাকে, যতক্ষণ না আমি তাকে ভালবাসি। অতঃপর যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমিই তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শ্রবণ করে। চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দর্শন করে। হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধারণ করে। পা হয়ে যাই, যার সাহায্যে সে চলাফেরা করে। যদি সে আমার নিকটে কোন কিছু প্রার্থনা করে, আমি তাকে তা দান করে থাকি। যদি সে আশ্রয় ভিক্ষা করে, আমি তাকে আশ্রয় দিয়ে থাকি। (বুখারী হা/৬৫০২)


৫. সালাতের শর্তাবলী

সালাতের বাইরের কিছু বিষয়, যা না হলে ছালাত সিদ্ধ হয় না, সেগুলিকে সালাতের শর্তাবলী বলা হয়। যা ৯টি। যেমন


(১) মুসলিম হওয়া (আলে ইমরান ৩/৮৫; তাওবা ৯/১৭)


(২) জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া (তিরমিযী, আবু দাউদ, মিশকাত হা/৩২৮৭)


(৩) বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া ও সেজন্য সাত বছর বয়স থেকেই নামাজ আদায় শুরু করা (আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৭২)


(৪) দেহ, কাপড় ও স্থান পাক হওয়া (মায়েদা ৫/৬, আরাফ ৭/৩১, মুদ্দাসসির ৭৪/৪; মুসলিম মিশকাত হা/২৭৬০ ক্রয় বিক্রয়’ অধ্যায়, ১ অনুচ্ছেদ; আবু দাউদ, তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৭৩৭, ৭৩৯, অনুচ্ছেদ-৭)


(৫) সতর ঢাকা। ছালাতের সময় পুরুষের জন্য দুই কাঁধ ও নাভি হতে হাটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের দুই হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সর্বাঙ্গ সতর হিসেবে ঢাকা। (মিশকাত হা/৭৫৫, সূরা নূর ২৪/৩১)


(৬) ওয়াক্ত হওয়া (নিসা ৪/১০৩)


(৭) ওযু-গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা (মায়েদা ৬)


(৮) কিবলামুখী হওয়া (বাক্বারাহ ২/১৪৪)


(৯) সালাতের নিয়ত বা সংকল্প করা (বুখারী ও মিশকাতের প্রথম হাদীস)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৬. নামাজের ফরজ কয়টি

রুকন অর্থ স্তম্ভ। এগুলি অপরিহার্য বিষয়। যা ইচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে পরিত্যাগ করলে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। যা ৭টি। যেমন


(১) কিয়াম বা দাঁড়ানো

আল্লাহ বলেন, আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ চিত্তে দাঁড়িয়ে যাও। (বাক্বারা ২/২৩৮) 


(২) তাকবীরে তাহরীমা

অর্থাৎ আল্লাহু আকবর বলে দুই হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উঠানো। আল্লাহ বলেন, তোমার প্রভুর জন্য তাকবীর দাও। (মুদ্দাসসির ৭৪/৩)। অর্থাৎ তার বড়ত্ব ঘোষণা কর। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, সালাতের জন্য সবকিছু হারাম হয় তাকবীরের মাধ্যমে এবং সবকিছু হালাল হয় সালাম ফিরানোর মাধ্যমে। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১২)


(৩) সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তির ছালাত সিদ্ধ নয়, যে ব্যক্তি সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করে না। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮২২)


(৪) রুকু করা

আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর ও সিজদা কর। (হজ্জ ২২/৭৭)। 


(৫) সিজদা করা

আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর ও সিজদা কর। (হজ্জ ২২/৭৭)। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

(৬) তাদীলে আরকান বা ধীর-স্থির ভাবে নামাজ আদায় করা

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দিলে তিনি তাকে সালামের জওয়াব দিয়ে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং সালাত আদায় কর। কেননা তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে লোকটি তিনবার সালাত আদায় করল ও রাসূল (ছাঃ) তাকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম করে বলছি, এর চাইতে সুন্দরভাবে আমি সালাত আদায় করতে জানিনা। অতএব দয়া করে আপনি আমাকে সালাত শিখিয়ে দিন! (অতঃপর তিনি তাকে ধীরে-সুস্থে ছালাত আদায় করা শিক্ষা দিলেন)। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭৯০, ‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০)।


(৭) কাদায়ে আখিরাহ বা শেষ বৈঠক

হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মহিলাগণ জামাতে ফরজ নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর পরে উঠে দাঁড়াতেন এবং রাসূল (ছাঃ) ও পুরুষ মুসল্লিগণ কিছু সময় বসে থাকতেন। অতঃপর যখন রাসূল (ছাঃ) দাঁড়াতেন তখন তারাও দাঁড়াতেন। (বুখারী, মিশকাত হা/৯৪৮ তাশাহুদে দোয়া অনুচ্ছেদ-১৭)


এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শেষ বৈঠকে বসা এবং সালাম ফিরানােটাই ছিল রাসূল (সাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত। প্রকাশ থাকে যে, কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হলে বসে বা শুয়ে ইশারায় নামাজ আদায় করবে। (বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮)। কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় নামাজ মাফ নেই। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৭. নামাজের ওয়াজিব কয়টি

রুকন-এর পরেই ওয়াজিবের স্থান, যা আবশ্যক। যা ইচ্ছাকৃতভাবে তরক করলে নামাজ বাতিল হয়ে যায়; এবং ভুলক্রমে তরক করলে ‘সিজদায়ে সাহু’ দিতে হয়। সালাতের ওয়াজিব ৮টি। যেমন


১. তাকবীরে তাহরীমা ব্যতীত অন্য সকল তাকবীর। (বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য, মিশকাত হা/৭৯৯, ৮০১)


২. রুকুতে তাসবিহ পড়া। কমপক্ষে সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম’ বলা। (নাসাঈ, আবু দাউদ তিরমিযী, মিশকাত হা/৮৮১ রুকূ অনুচ্ছেদ-১৩)


৩. কওমার সময় সামিআল্লাহ-হুলিমান হামিদাহ বলা। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/ ৮৭০, ৭৪, ৭৫, ৭৭)


৪. কওমার দো’আ কমপক্ষে রব্বানা লাকাল হামদ’ অথবা ‘আল্লা-হুম্মা  রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা। (বুখারী হা/৭৩২-৩৫, ৭৩৮; মুসলিম হা/৯০৪, ৯১৩।


৫. সিজদায় গিয়ে তাসবিহ পড়া। কমপক্ষে সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা’ বলা। (নাসাঈ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৮৮১)


৬. দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করা। যেমন কমপক্ষে রব্বিগফিরলী’ ২ বার বলা। (ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আবুদাউদ হা/৮৫০)


৭. প্রথম বৈঠকে বসা ও তাশাহুদ পাঠ করা। (মিশকাত হা/৯০৯)


৮. সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১২)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৮. নামাজের সুন্নত কয়টি

ফরজ ও ওয়াজিব ব্যতীত ছালাতের বাকি সব আমলই সুন্নাত। যেমন 


(১) জুমার ফরজ নামাজ ব্যতীত দিবসের সকল নামাজ নীরবে ও রাত্রির ফরজ নামাজ সমূহ সরবে পড়া


(২) প্রথম রাকাতে কিরাতের পূর্বে আউযুবিল্লাহ চুপে চুপে পাঠ করা


(৩) সালাতে পঠিতব্য সকল দোয়া পাঠ করা


(৪) বুকে হাত বাঁধা 


(৫) রাফউল ইয়াদাইন করা 


(৬) আমীন বলা 


(৭) সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখা 


(৮) জালসায়ে ইস্তিরাহাত করা 


(৯) মাটিতে দুই হাতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো 


(১০) সালাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নজর রাখা 


(১১) তাশাহুদের সময় ডান হাত ৫৩ এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ করা ও শাহাদাত আঙ্গুল নাড়াতে থাকা; এছাড়া ফরয ওয়াজিবের বাইরে সকল বৈধ কর্মসমূহ। 


৯. নামাজ ভঙ্গের কারণ

১. ছালাতরত অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খাওয়া বা পান করা। 


২. সালাতের স্বার্থ ব্যতিরেকে অন্য কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বলা। 


৩. ইচ্ছাকৃতভাবে বাহুল্য কাজ বা ‘আমলে কাছীর’ করা। যা দেখলে ধারণা হয় যে, সে সালাতের মধ্যে নয়।


৪. ইচ্ছাকৃত বা বিনা কারণে সালাতের কোন রুকন বা শর্ত পরিত্যাগ করা। 


৫. সালাতের মধ্যে অধিক হাস্য করা।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১০. নামাজ কত রাকাত

পাঁচ ওয়াক্তে দিনে-রাতে মোট ১৭ রাকাত ও জুমার দিনে ১৫ রাকাত নামাজ ফরজ এবং ১২ অথবা ১০ রাকাত নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যেমন 


(১) ফজরের নামাজ কয় রাকাত

ফজরের নামাজ ২ রাকাত সুন্নাত, অতঃপর ২ রাকাত ফরজ 


(২) যোহরের নামাজ কয় রাকাত

যোহরের নামাজ ৪ অথবা ২ রাকাত সুন্নাত, অতঃপর ৪ রাকাত ফরজ। অতঃপর ২ রাকাত সুন্নত 


(৩) আসরের নামাজ কত রাকাত

আসরের নামাজ ৪ রাকাত ফরজ 


(৪) মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত

মাগরিবের নামাজ ৩ রাকাত ফরজ। অতঃপর ২ রাকাত সুন্নত 


(৫) এশার নামাজ কয় রাকাত

এশার নামাজ ৪ রাকাত ফরজ। অতঃপর ২ রাকাত সুন্নাত। অতঃপর শেষে এক রাকাত বিতর। 


জুম’আর নামাজ ২ রাকাত ফরজ। জুমা পড়লে যোহর পড়তে হয় না। কেননা জুমা হল যোহরের স্থলাভিষিক্ত। ফরজের পূর্বে মসজিদে প্রবেশের পর বসার পূর্বে কমপক্ষে ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ এবং জুমা শেষে ৪ অথবা ২ রাকআত সুন্নাত। 


উপরে বর্ণিত সবগুলো রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিয়মিত আমল দ্বারা নির্ধারিত এবং ছহীহ হাদীছ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত। 


ছহীহ ইবনু খুযায়মা ‘ছালাত অধ্যায়, ২ অনুচ্ছেদ; নাসাঈ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-৩


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১১. নামাজের ওয়াক্ত সমূহ

আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা ফরয। আল্লাহ বলেন, মুমিনদের উপর ‘নামাজ’ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে’ (নিসা ৪/১০৩)। মিরাজ রজনীতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয হওয়ার পরের দিন যোহরের সময় জিবরীল (আঃ) এসে প্রথম দিন আউয়াল ওয়াক্তে ও পরের দিন আখেরি ওয়াক্তে নিজ ইমামতিতে পবিত্র কাবা চত্বরে মাকামে ইবরাহীমের পাশে দাঁড়িয়ে দুই দিনে পাঁচ পাঁচ দশ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কে ছালাতের পসন্দনীয় সময়কাল ঐ দুই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ হা/৩৯৩; তিরমিযী হা/১৪৯) তবে আউয়াল ওয়াক্তে সালাত আদায় করাকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সর্বোত্তম আমল হিসাবে অভিহিত করেছেন। (আহমাদ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৬০৭)


(১) ফজর

ছুবহে ছাদিক হতে সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সর্বদা ‘গালাস’ বা ভােরের অন্ধকারে ফজরের সালাত আদায় করতেন এবং জীবনে একবার মাত্র ‘ইসফার’ বা চারিদিকে ফর্সা হওয়ার সময়ে ফজরের ছালাত আদায় করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এটাই তার নিয়মিত অভ্যাস ছিল। (আবুদাঊদ হা/৩৯৪)


১৯৭ অতএব ‘গালাস’ ওয়াক্তে অর্থাৎ ভােরের অন্ধকারে ফজরের ছালাত আদায় করাই প্রকৃত সুন্নাত।


(২) যোহর

সূর্য পশ্চিম দিকে ঢললেই যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং বস্তুর নিজস্ব ছায়ার এক গুণ হলে শেষ হয়। (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮১)


(৩) আছর

বস্তুর মূল ছায়ার এক গুণ হওয়ার পর হতে আসরের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং দুই গুণ হলে শেষ হয়। তবে সূর্যাস্তের প্রাক্কালের রক্তিম সময় পর্যন্ত আছর পড়া জায়েয আছে। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৮৩)


(৪) মাগরিব

সূর্য অস্ত যাওয়ার পরেই মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং সূর্যের লালিমা শেষ হওয়া পর্যন্ত বাকী থাকে। (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮১)


(৫) এশা

মাগরিবের পর হতে এশার ওয়াক্ত শুরু হয় এবং মধ্যরাতে শেষ হয়। (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮১)


তবে যরূরী কারণ বশতঃ ফজরের পূর্ব পর্যন্ত এশার সালাত আদায় করা জায়েয আছে। (মুসলিম হা/১৫৬২)


প্রচণ্ড গ্রীষ্মে যোহরের সালাত একটু দেরিতে এবং প্রচণ্ড শীতে এশার সালাত একটু আগেভাগে পড়া ভালো। তবে কষ্টবোধ না হলে এশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশের পর আদায় করা উত্তম। (বুখারী, মিশকাত হা/৫৯০-৯১)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১২. নামাজের নিষিদ্ধ সময়

সূর্যোদয়, মধ্যাহ্ন ও সূর্যাস্ত কালে সালাত শুরু করা সিদ্ধ নয়। (মুসলিম, মিশকাত হা/১০৩৯-৪০)


অনুরূপভাবে আসরের সালাতের পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এবং ফজরের সালাতের পর হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোন সালাত নেই। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১০৪১)


তবে এ সময় কাযা সালাত আদায় করা জায়েয আছে। (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০৪৩)


বিভিন্ন হাদীছের আলোকে অনেক বিদ্বান নিষিদ্ধ সময় গুলিতে ‘কারণ বিশিষ্ট’ সালাত সমূহ জায়েয বলেছেন। যেমন তাহিয়্যাতুল মসজিদ, তাহিয়্যাতুল ওযু, সূর্য গ্রহণের ছালাত, জানাযার সালাত ইত্যাদি। জুম’আর ছালাত ঠিক দুপুরের সময় জায়েজ আছে।


অমনিভাবে কাবা গৃহে দিবারাত্রি সকল সময় সালাত ও তাওয়াফ জায়েজ আছে। (নাসাঈ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/ ১০৪৫)


১৩. নামাজের নিষিদ্ধ স্থান

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন যে, সমগ্র পৃথিবীই সিজদার স্থান, কেবল কবরস্থান ও গােসলখানা ব্যতীত। (আবু দাউদ, তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৭৩৭)। সাতটি স্থানে সালাত নিষিদ্ধ হওয়ার হাদীছটি যঈফ। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/৭৩৮ আলবানী, ইরওয়া হা/২৮৭; যঈফুল জামে হা/৩২৩৫)


বিভিন্ন নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস

১৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস

১৪.১. নিয়ত

নিয়ত অর্থ সংকল্প। সালাতের শুরুতে নিয়ত করা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, সকল কাজ নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাই-ই পাবে, যার জন্য সে নিয়ত করবে। (সহীহ বুখারী ও মিশকাত -এর ১ম হাদীছ) অতএব সালাতের জন্য ওযু করে পবিত্র হয়ে পরিচ্ছন্ন পোশাক ও দেহ-মন নিয়ে কা’বা গৃহ পানে মুখ ফিরিয়ে মনে মনে সালাতের দৃঢ় সংকল্প করে স্বীয় প্রভুর সন্তুষ্টি কামনায় তার সম্মুখে বিনম্র চিত্তে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। মুখে নিয়ত পাঠের প্রচলিত রেওয়াজটি দ্বীনের মধ্যে একটি নতুন সৃষ্টি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সালাতে এর কোন স্থান নেই। অনেকে সালাত শুরুর আগেই জায়নামাজের দোয়া মনে করে ইন্নী ওয়াজ্জাহতু…পড়েন। এই রেওয়াজটি সুন্নাতের বরখেলাপ। মূলত জায়নামাজের দোয়া বলে কিছু নেই। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.২. তাকবীরে তাহরীমা

ওযু করার পর ছালাতের সংকল্প করে ক্বিবলামুখী দাঁড়িয়ে দুই হাতের আংগুল সমূহ ক্বিবলামুখী খাড়াভাবে কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উঠিয়ে দুনিয়াবী সবকিছুকে হারাম করে দিয়ে স্বীয় প্রভুর মহত্ত্ব ঘোষণা করে বলবে ‘আল্লা-হু আকবার’ (আল্লাহ সবার চেয়ে বড়)। অতঃপর বাম হাতের উপর ডান হাত বুকের উপরে বেঁধে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সম্মুখে নিবেদিত চিত্তে সিজদার স্থান বরাবর দৃষ্টি রেখে দন্ডায়মান হবে। 


ওয়ায়েল বিন হুজুর (রাঃ) বলেন,


আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে সালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপর রাখলেন। 


ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাউদ হা/৭৫৫, ইবনু মাসঊদ হতে; ঐ, হা/৭৫৯


১৪.৩. ছানা

ছানা অর্থ প্রশংসা। এটা মূলতঃ দো‘আয়ে ইস্তেফতাহ বা ছালাত শুরুর দো’আ; বুকে জোড় হাত বেঁধে সিজদার স্থানে দৃষ্টি রেখে বিনম্র চিত্তে নিম্নোক্ত দোআর মাধ্যমে মুছল্লী তার সর্বোত্তম ইবাদতের শুভ সূচনা করবে। 


উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা বা-‘এদ বায়নী ওয়া বায়না খাত্বা-ইয়া-ইয়া, কামা বা‘আদতা বায়নাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি। আল্লা-হুম্মা নাককিনী মিনাল খাত্বা-ইয়া, কামা ইউনাককৃাছ সাওবুল আব ইয়াযু মিনাদ দানাসি। আল্লা হুম্মাগসিল খাত্বা-ইয়া-ইয়া বিল মা-য়ি ওয়াস সালজি ওয়াল বারাদি’। 


অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি আমার ও আমার গুনাহ সমূহের মধ্যে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন, যেমন দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে পরিচ্ছন্ন করুন গুনাহ সমূহ হতে, যেমন পরিচ্ছন্ন করা হয় সাদা কাপড় ময়লা হতে। হে আল্লাহ, আপনি আমার গুনাহ সমূহকে ধুয়ে সাফ করে দিন পানি দ্বারা, বরফ দ্বারা ও শিশির দ্বারা।


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮১২ তাকবীরের পর যা পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১।


একে ‘ছানা বা দোয়ায়ে ইস্তেফতাহ বলা হয়। ছানার জন্য অন্য দো’আও রয়েছে। তবে এই দো’আটি সর্বাধিক বিশুদ্ধ।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.৪. সূরায়ে ফাতিহা পাঠ

দোয়ায়ে ইস্তেফতাহ বা ছানা’ পড়ে আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ সহ সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করবে এবং অন্যান্য রাকাতে কেবল বিসমিল্লাহ বলবে। জেহরী সালাত হলে সূরায়ে ফাতিহা শেষে সশব্দে আমীন’ বলবে। 


১৪.৫. কিরাআত

সূরায়ে ফাতিহা পাঠ শেষে ইমাম কিংবা একাকী মুছল্লী হলে প্রথম দু’রাকআতে কুরআনের অন্য কোন সূরা বা কিছু আয়াত তিলাওয়াত করবে। কিন্তু মুক্তাদী হলে জেহরী সালাতে চুপে চুপে কেবল সূরায়ে ফাতিহা পড়বে ও ইমামের ক্বিরাআত মনোযোগ দিয়ে শুনবে। তবে যোহর ও আসরের ছালাতে ইমাম মুক্তাদী সকলে প্রথম দু’রাকআতে সূরায়ে ফাতিহা সহ অন্য সূরা পড়বে এবং শেষের দুই রাকাতে কেবল সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করবে। 


১৪.৬. রুকু

কিরাআত শেষে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে দু হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উঠিয়ে ‘রাফউল ইয়াদায়েন করে রুকুতে যাবে। এ সময় হাঁটুর উপরে দুই হাতে ভর দিয়ে পা, হাত, পিঠ ও মাথা সোজা রাখবে এবং রুকুর দো’আ পড়বে। 


রুকুর দো’আ : সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম’ (মহাপবিত্র আমার প্রতিপালক যিনি মহান) কমপক্ষে তিনবার পড়বে। 


১৪.৭. কওমা

অতঃপর রুকু থেকে উঠে সোজা ও সুস্থিরভাবে দাঁড়াবে। এ সময় দু’হাত কিবলামুখী খাড়া রেখে কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে এবং ইমাম ও মুক্তাদী সকলে বলবে ‘সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ (আল্লাহ তার কথা শোনেন, যে তার প্রশংসা করে)। অতঃপর ‘কওমা’র দো’আ একবার পড়বে। 


কওমার দোয়া : রাব্বানা লাকাল হামদ’ (হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার জন্যই সকল প্রশংসা)। অথবা পড়বে- রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু হামদান কাছীরান ত্বইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার জন্য অগণিত প্রশংসা, যা পবিত্র ও বরকতময়)। কওমার জন্য অন্য দোয়াও রয়েছে। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.৮. সিজদা

কওমার দো’আ পাঠ শেষে ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে প্রথমে দু’হাত ও পরে দুই হাটু মাটিতে রেখে সিজদায় যাবে ও বেশি বেশি দুআ পড়বে। এ সময় দু’হাত কিবলামুখী করে মাথার দুই পাশে কাধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন নিচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মতো ফাঁকা থাকে। সিজদা থেকে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এ সময় স্থির ভাবে বসে দোয়া পড়বে। অতঃপর আল্লা-হু আকবর’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে ও দোয়া পড়বে। রুকু ও সিজদায় কুরআনী দু’আ পড়বে না। ২য় ও ৪র্থ রাকাতে দাঁড়ানোর প্রাক্কালে সিজদা থেকে উঠে সামান্য সময়ের জন্য স্থির হয়ে বসবে। একে ‘জালসায়ে ইস্তিরাহাত’ বা ‘স্বস্তির বৈঠক’ বলে। অতঃপর মাটিতে দু’হাতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যাবে।


সিজদার দো’আ : (সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা) অর্থ ‘মহাপবিত্র আমার প্রতিপালক যিনি সর্বোচ্চ। কমপক্ষে তিনবার পড়বে। রুকু ও সিজদার অন্য দো’আও রয়েছে। দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দো’আ :


উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লী ওয়ারহানী ওয়াজ বুরনী ওয়াহদিনী ওয়া ‘আফিনী ওয়ারঝুকুনী। অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার উপরে রহম করুন, আমার অবস্থার সংশোধন করুন, আমাকে সৎপথ প্রদর্শন করুন, আমাকে সুস্থতা দান করুন ও আমাকে রুযী দান করুন।


তিরমিযী হা/২৮৪; ইবনু মাজাহ হা/৮৯৮; আবু দাউদ হা/৮৫০


১৪.৯. বৈঠক

২য় রাকাত শেষে বৈঠকে বসবে। তিন রাকাত ও চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে ২য় রাকাতের পর ১ম বৈঠক শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাড়াবে এবং দুই হাত কান অথবা কাধ বরাবর উঠিয়ে পুনরায় বুকের উপর বাধবে। ফরজ নামাজ হলে ৩য় ও ৪র্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে না কিন্তু সুন্নাত বা নফল হলে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। তারপর শেষ বৈঠক করতে হবে। আর দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে ২য় রাকাতের পর শেষ বৈঠক করতে হবে।


১ম বৈঠকে কেবল ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য উঠে যাবে। আর শেষ বৈঠকে ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো’আয়ে মাছূরাহ ও সম্ভব হলে বেশি বেশি করে অন্য দোয়া পড়বে। ১ম বৈঠকে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে এবং শেষ বৈঠকে ডান পায়ের তলা দিয়ে বাম পায়ের অগ্রভাগ বের করে বাম নিতম্বের উপরে বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। এ সময় ডান পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করবে। বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে এবং ডান হাত ৫৩-এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ রেখে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত শাহাদাত অঙ্গুলি নাড়িয়ে ইশারা করতে থাকবে। মুসল্লির নজর ইশারার বাইরে যাবে না। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.৯.১. তাশাহ্হুদ (আত্তাহিইয়া-তু):

উচ্চারণ : আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি ওয়াছ ছালাওয়া-তু ওয়াত্ ত্বাইয়িবা-তু আসসালা-মু আলায়কা আইয়ুহান নাবিইয়ু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবা-দিল্লা-হিছ ছা-লিহীন। আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।। অনুবাদ : যাবতীয় সম্মান, যাবতীয় উপাসনা ও যাবতীয় পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি সমূহ নাযিল হোক। শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাগণের উপরে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল (বুঃ মুঃ)। 


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯০৯ ‘ছালাত অধ্যায়-৪, ‘তাশাহুদ’ অনুচ্ছেদ-১৫


১৪.৯.২. দরূদ :

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ছাল্লে আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা ছাল্লায়তা ‘আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আ-লে মুহাম্মাদিন কামা বা-রতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।


অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবারের উপরে, যেমন আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম ও ইবরাহীমের পরিবারের উপরে । নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবারের উপরে, যেমন আপনি বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম ও ইবরাহীমের পরিবারের উপরে। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।


মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯১৯


১৪.৯.৩. দো’আয়ে মাছূরাহ :

মাছুরা অর্থ হাদিসে বর্ণিত। সেই হিসাবে হাদীসে বর্ণিত সকল দো’আই মাসুরা। কেবলমাত্র একটি দোয়া নয়। তবে নিম্নের দোয়াটিই এদেশে ‘দো’আয়ে মাছূরাহ’ হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। 


উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাক্সী যুলমান কাছীরাও অলা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা, ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম। 


অনুবাদ : হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের উপর অসংখ্য যুলুম করেছি। ঐসব গুনাহ মাফ করার কেউ নেই আপনি ব্যতীত। অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ হতে বিশেষভাবে ক্ষমা করুন এবং আমার উপরে অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান। 


মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৪২ ‘তাশাহহুদে দো’আ অনুচ্ছেদ-১৭; বুখারী হা/৮৩৪ আযান অধ্যায়-২, সালামের পূর্বে দো‘আ’ অনুচ্ছেদ-১৪৯। 


তাশাহুদের শেষে নিম্নোক্ত দুআটি পাঠ করার জন্য বিশেষভাবে তাকীদ এসেছে –


উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নামা ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন ‘আযা-বিল কাবরি, ওয়া আউযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহি দাজ্জা-লি, ওয়া আউযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামা-তি। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করছি জাহান্নামের আযাব হতে, কবরের আযাব হতে, দাজ্জালের ফিতনা হতে এবং জীবন ও মৃত্যু কালীন ফিতনা হতে।


মুসলিম, মিশকাত হা/৯৪০-৪১


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

তাশাহুদ ও সালামের মধ্যেকার দো’আ সমূহের শেষে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) নিমের দো’আ পড়তেন :

(১) উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগফিরলী মা ক্বাদ্দামতু অমা আখশারতু, ওয়ামা আসরারতু অমা আ লানতু, ওয়ামা আসরাফতু, ওয়া মা আংতা আলামু বিহী মিন্নি; আংতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আংতাল মুয়াখখিরু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা। 


অনুবাদঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বাপর গোপন ও প্রকাশ্য সকল গোনাহ মাফ কর (এবং মাফ কর ঐসব গোনাহ) যাতে আমি বাড়াবাড়ি করেছি এবং ঐসব গুনাহ যে বিষয়ে তুমি আমার চাইতে বেশী জানাে। তুমি অগ্র পশ্চাতের মালিক। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।


মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘তাকবীরের পরে কি পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১। 


(২) আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আ’ঊযু বিকা মিনান্না-র’ 


(হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ চাচ্ছি)।


আবু দাউদ হা/৭৯৩, ‘ছালাত অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-১২৮; সহীহ ইবনে হিব্বান হা/৮৬৫


তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে দো’আ বিষয়ে জ্ঞাতব্য: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাশাহুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন দো’আ পড়তেন। 


মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩ তাকবীরের পর যা পড়তে হয়’ অনুচ্ছেদ-১১; নববী, রিয়াদুস সালেহীন ‘জিকির’ অধ্যায় হা/১৪২৪।


ইবনু মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত তাশাহহুদে (অর্থাৎ আত্তাহিয়াতু)এর শেষে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, অতঃপর দো’আ সমূহের মধ্যে যে দো’আ সে পসন্দ করে, তা করবে। 


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯০৯; মিরআত হা/৯১৫, ৩/২৩৫।

এ কথার ব্যাখ্যায় বিদ্বান গণের মধ্যে একদল বলেছেন, এ সময় গোনাহ নেই এবং আদবের খেলাফ নয়, দুনিয়া ও আখেরাতের এমন সকল প্রকার দুআ করা যাবে। পক্ষান্তরে অন্যদল বলেছেন, কুরআন হাদীসে বর্ণিত দো’আ সমূহের মাধ্যমেই কেবল প্রার্থনা করতে হবে। কেননা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমাদের এই ছালাতে মানুষের সাধারণ কথাবার্তা বলা চলে না। এটি কেবল তাসবিহ, তাকবির ও কুরআন পাঠ মাত্র  


মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৭৮ 


বর্ণিত উভয় হাদীছের মধ্যে সামঞ্জস্য এটাই হতে পারে যে, অন্যের উদ্দেশ্যে নয় এবং আদবের খেলাফ নয়, আল্লাহর নিকট এমন সকল দো’আ করা যাবে। তবে সালাতের পুরা অনুষ্ঠানটিই যেহেতু আরবী ভাষায়, সেহেতু অনারবদের জন্য নিজেদের তৈরী করা আরবীতে প্রার্থনা করা নিরাপদ নয়। দ্বিতীয়ত: সর্বাবস্থায় সকলের জন্য হাদীছের দুআ পাঠ করাই উত্তম। কিন্তু যখন দো’আ জানা থাকে না, তখন তার জন্য সবচেয়ে উত্তম হবে প্রচলিত দো’আয়ে মাছূরাহ (আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু…) শেষে নিম্নের দোআটির ন্যায় যে কোন একটা সারগর্ভ দোয়া পাঠ করা, যা দুনিয়া ও আখেরাতের সকল প্রয়ােজনকে শামিল করে। আনাস (রাঃ) বলেন, এ দোয়াটি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ সময় পড়তেন।


আল্লাহুম্মা রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়াফিল আ-খিরাতে হাসানাতাঁও ওয়া কিনা আযা-বান্না-র। অথবা আল্লা-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া ..।


হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দাও ও আখেরাতে মঙ্গল দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও।


বুখারী হাদিস নং ৪৫২২


এ সময় দুনিয়াবী চাহিদার বিষয় গুলো নিয়তের মধ্যে শামিল করবে। কেননা আল্লাহ বান্দার অন্তরের খবর রাখেন ও তার হৃদয়ের কান্না শুনেন। দোয়ার সময় নির্দিষ্টভাবে কোন বিষয়ে নাম না করাই ভাল। কেননা ভবিষ্যতে বান্দার কিসে মঙ্গল আছে, সেটা আল্লাহ ভালো জানেন।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.১০. সালাম

দো’আয়ে মাছূরাহ শেষে প্রথমে ডানে ও পরে বামে আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ (আল্লাহর পক্ষ হতে আপনার উপর শান্তি ও অনুগ্রহ বর্ষিত হোক!) বলে সালাম ফিরাবে। প্রথম সালামের শেষে ‘ওয়া বারাকাতুহু’ (এবং তার বরকত সমূহ) যোগ করা যেতে পারে। এভাবে সালাত সমাপ্ত করে প্রথমে সরবে একবার ‘আল্লা-হু আকবর’ (আল্লাহ সবার বড়) ও তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ (আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি) বলে নিম্নের দুআ সমূহ এবং অন্যান্য দো’আ পাঠ করবে। এ সময় ইমাম হলে ডানে অথবা বামে ঘুরে সরাসরি মুক্তাদীগণের দিকে ফিরে বসবে। অতঃপর সকলে নিম্নের দো’আ সহ অন্যান্য দো’আ পাঠ করবে।


উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু ওয়া মিকাস্ সালা-মু, তাবা-রক্ত ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম। 


অনুবাদ : হে আল্লাহ আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময় আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিক।


১৪.১১. নামাজের দোয়া সমূহ

১৪.১১.১. ফরজ নামাজের পর দোয়া

১. আল্লা-হু আকবার (একবার সরবে)। আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ। 


অর্থ : আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।


মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৯৫৯, ৯৬১ ছালাত পরবর্তী যিকর’ অনুচ্ছেদ-১৮।


২. আল্লা-হুম্মা আনতাস সালা-মু, ওয়া মিনকাস সালা-মু, তাবা-রাকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরা-ম।


অর্থ : হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময় আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিক। এটুকু পড়েই ইমাম উঠে যেতে পারেন।


মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬০


৩. লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর; লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ (উচ্চস্বরে)। (মিশকাত হা/৯৬৩) আল্লা-হুম্মা আ ইন্নী ‘আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনে ‘ইবা-দাতিকা। আল্লা-হুম্মা লা মা-নে আ লেমা আ ত্বাইতা অলা মু ত্বিয়া লেমা মানা তা অলা ইয়াফা’উ যাল জাদ্দি মিকাল জাদু। 


অর্থ : নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত, যিনি একক ও শরীর বিহীন। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ ব্যতীত। (মিশকাত হা/৯৬৩) ‘হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন। (মিশকাত হা/৯৪৯) ‘হে আল্লাহ! আপনি যা দিতে চান, তা রোধ করার কেউ নেই এবং আপনি যা রোধ করেন, তা দেওয়ার কেউ নেই। কোন সম্পদশালী ব্যক্তির সম্পদ কোন উপকার করতে পারে না আপনার রহমত ব্যতীত। (মিশকাত হা/৯৬২)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৪. রাযীতু বিললা-হে রববাঁও ওয়া বিল ইসলা মে দীনাঁও ওয়া বিমুহাম্মাদিন্ নাবিইয়া।

অর্থ: আমি সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম আল্লাহর উপরে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামের উপরে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদের উপরে নবী হিসাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি এই দুআ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (আবু দাউদ হা/১৫২৯)


৫. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আউজুবিকা মিন ফিৎনাতিদ দুন্‌ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। 


অর্থঃ হে আল্লাহ! (১) আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হতে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হতে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হতে; এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিতনা হতে ও (৫) কবরের আযাব হতে। (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)


৬. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল ‘আজযি ওয়াল কাসালে ওয়াল জুবনে ওয়াল বুখলে ওয়া যালাইদ দায়নে ওয়া গালাবাতির রিজাল। 


অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ-বেদনা হতে, অক্ষমতা ও অলসতা হতে; ভীরুতা ও কৃপণতা থেকে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের জবরদস্তি হতে। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৫৮)


৭. সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী আদাদা খালক্বিহী ওয়া রিযা নাফসিহী ওয়া জিনাতা ‘আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালিমা-তিহ (৩ বার)। অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তার জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তার সত্তার সন্তুষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওজন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০১)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

৮. ইয়া মুকাল্লিবাল কুনূবে ছাব্বিত কালবী ‘আলা দ্বীনিকা, আল্লা-হুম্মা মুছারিরফল কুলুবে ছাররিফ কুলুবানা ‘আলা ত্বোয়া-আতিকা। 

অর্থ : হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখ। হে অন্তর সমূহের রূপান্তরকারী! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১০২)


৯. আল্লা-হুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা ওয়া আজিরনী মিনান্ না-র (৩ বার)। 


অর্থ : হে আল্লাহ তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও! (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৪৭৮)


১০. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত তুকা ওয়াল ‘আফাফা ওয়াল গিণা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৮৪)


১১. সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)। আলহাম্দুলিল্লা-হ (৩৩ বার)। আল্লাহু আকবার (৩৩ বার)। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর (১ বার) / অথবা আল্লাহু আকবার (৩৪ বার)। 


অর্থ : পবিত্রতাময় আল্লাহ। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য এক আল্লাহ ব্যতীত; তার কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা; তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। (মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৬, ৯৬৭)


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর উক্ত দো’আ পাঠ করবে, তার সকল গুনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়। (মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৭)


অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি আয়েশা ও ফাতেমা (রাঃ)-কে বলেন, তোমরা এ দুআটি প্রত্যেক সালাতের শেষে এবং শয়নকালে পড়বে। এটাই তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চাইতে উত্তম হবে। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৭-৮৮)


১২. সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী, সুবহা-নাল্লা-হিল আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ পড়বে। 


অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তার জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান। 


এই দো’আ পাঠের ফলে তার সকল গুনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দো’আ সম্পর্কে বলেন যে, দু’টি কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকট খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী। তা হ’ল সুবহা-নাল্লাহি….। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮)


ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর জগদ্বিখ্যাত কিতাব ছহীহুল বুখারী উপরোক্ত হাদীস ও দোয়ার মাধ্যমে শেষ করেছেন।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৩. আয়াতুল কুরসী :

আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। লা তা’খুযুহু সেনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিসসামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আর্য। মান যাল্লাযী ইয়াশফা উ ইনদাহু ইল্লা বি ইজনিহি। ইয়ালামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ; ওয়াসে’আ কুরসিইয়ুহুস সামা ওয়া-তে ওয়াল আর; ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজু হুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল আজীম (বাক্বারাহ ২/২৫৫)।


অর্থ : আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তার হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হ’তে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাকে মোটেও শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত’ (নাসাঈ)। শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হিফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে’ (বুখারী)। (নাসাঈ কুবরা হা/৯৯২৮, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২; মিশকাত হা/৯৭৪)


১৪. আল্লা-হুম্মাফিনী বেহালা-লেকা ‘আন হারা-মেকা ওয়া আগনিনী বিফাদলীকা ‘আম্মান সেওয়া-কা। 

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন! রাসূল (ছাঃ) বলেন, এই দো’আর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন। (তিরমিযী, বায়হাক্বী (দাওয়াতুল কাবীর), মিশকাত হা/২৪৪৯)


১৫. আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি। 


অর্থ : আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তার দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি। 


এই দো’আ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়। (তিরমিযী, আবু দাউদ, মিশকাত হা/২৩৫৩)


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দৈনিক ১০০ করে বার তওবা করতেন। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫)


রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রত্যেক সালাতের শেষে সূরা ফালাক’ ও ‘নাস’ পড়ার নির্দেশ দিতেন। (মিশকাত হা/৯৬৯)


তিনি প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার সময় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে দু’হাতে ফুক দিয়ে মাথা ও চেহারাসহ সাধ্যপক্ষে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। তিনি এটি তিনবার করতেন। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৩২)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.১১.২. মুনাজাত

মুনাজাত অর্থ পরস্পরে গোপনে কথা বলা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন সালাতে রত থাকে, তখন সে তার প্রভুর সাথে মুনাজাত করে অর্থাৎ গােপনে কথা বলে। (বুখারী (দিল্লী ছাপা) ১/৭৬ পৃঃ; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭১০) তাই ছালাত কোন ধ্যান (Meditation) নয়, বরং আল্লাহর কাছে বান্দার সরাসরি ক্ষমা চাওয়া ও প্রার্থনা নিবেদনের নাম। দুনিয়ার কাউকে যা বলা যায় না, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে বান্দা তাই-ই বলে। আল্লাহ স্বীয় বান্দার চোখের ভাষা বোঝেন ও হৃদয়ের কান্না শুনেন। আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। (মুমিন/গাফির ৪০/৬০)। 


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, দো‘আ হল ইবাদত। (মিশকাত হা/২২৩০) অতএব দোয়ার পদ্ধতি সুন্নাত মোতাবেক হতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কোন পদ্ধতিতে দো’আ করেছেন, আমাদেরকে সেটা দেখতে হবে। তিনি যেভাবে প্রার্থনা করেছেন, আমাদেরকে সেভাবেই প্রার্থনা করতে হবে। তার রেখে যাওয়া পদ্ধতি ছেড়ে অন্য পদ্ধতিতে দো’আ করলে তা কবুল হওয়ার বদলে গােনাহ হওয়ারই সম্ভাবনা বেশী থাকবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাতের মধ্যেই দো’আ করেছেন।


তাকবীরে তাহরীমার পর থেকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত সালাতের সময়কাল। (মিশকাত হা/৩১২) ছালাতের এই নিরিবিলি সময়ে বান্দা স্বীয় প্রভুর সাথে মুনাজাত করে। ‘ছালাত’ অর্থ দো’আ, ক্ষমা প্রার্থনা ইত্যাদি। ছানা’ হ’তে সালাম ফিরানাের আগ পর্যন্ত ছালাতের সর্বত্র কেবল দো‘আ আর দোয়া। অর্থ বুঝে পড়লে উক্ত দো‘আগুলির বাইরে বান্দার আর তেমন কিছুই চাওয়ার থাকে না। তবুও সালাম ফিরানাের পরে একাকী দো‘আ করার প্রশস্ত সুযােগ রয়েছে। তখন ইচ্ছামত যে কোন ভাষায় যে কোন বৈধ দোয়া করা যায়। 


১৪.১১.৩. সালাতে দোয়ার স্থান সমূহ

(১) ছানা বা দোয়ায়ে ইস্তেফতাহ, যা ‘আল্লা-হুম্মা বা-এদ বায়নী’ দিয়ে শুরু হয় 


(২) শ্রেষ্ঠ দো‘আ হ’ল সূরায়ে ফাতিহার মধ্যে আলহামদুলিল্লাহ’ ও ‘ইহদিনাছ ছিরা-তাল মুস্তাকিম 


(৩) রুকুতে ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা…


(৪) রুকূ হ’তে উঠার পর কৃওমার দো’আ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ হামদান কাছীরান… বা অন্য দোয়া সমূহ। 


(৫) সিজদাতেও সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা’… বা অন্য দো’আ সমূহ। 


(৬) দুই সিজদার মাঝে বসে ‘আল্লা-হুম্মাগফিরলী…’ বলে ৬টি বিষয়ের প্রার্থনা। 


(৭) শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে দো’আয়ে মাছূরাহ সহ বিভিন্ন দুআ পড়া।


(৮) কওমাতে দাঁড়িয়ে দো’আয়ে কুনূতের মাধ্যমে দীর্ঘ দো’আ করার সুযোগ। 


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, সিজদার সময় বান্দা তার প্রভূর সর্বাধিক নিকটে পৌছে যায়; অতএব ঐ সময় তোমরা সাধ্যমত বেশি বেশি দুআ কর। (মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪)


অন্য হাদিসে এসেছে যে, তিনি শেষ বৈঠকে তাশাহুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে বেশি বেশি দোয়া করতেন। (মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩)


সালাম ফিরানোর পরে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার মুনাজাত বা গোপন আলাপের সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়। অতএব সালাম ফিরানোর আগেই যাবতীয় দুআ শেষ করা উচিত, সালাম ফিরানোর পরে নয়। এক্ষণে যদি কেউ মুছল্লীদের নিকটে কোন ব্যাপারে বিশেষভাবে দোয়া চান, তবে তিনি আগেই সেটা নিজে অথবা ইমামের মাধ্যমে সকলকে অবহিত করবেন। যাতে মুসল্লিগণ স্ব স্ব দো’আর নিয়তের মধ্যে তাকেও শামিল করতে পারেন।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.১১.৪. ফরয সালাত বাদে সম্মিলিত দো’আ

ফরয সালাত শেষে সালাম ফিরানোর পর ইমাম ও মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে হাত উঠিয়ে ইমামের সরবে দো’আ পাঠ ও মুক্তাদীদের সশব্দে আমীন ‘আমীন’ বলার প্রচলিত প্রথাটি দ্বীনের মধ্যে একটি নতুন সৃষ্টি। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম হতে এর পক্ষে সহীহ বা যঈফ সনদে কোন দলীল নেই। বলা আবশ্যক যে, আজও মক্কা-মদিনার দুই হারামের মসজিদে উক্ত প্রথার কোন অস্তিত্ব নেই। 


১৪.১১.৫. প্রচলিত সম্মিলিত দুআর ক্ষতিকর দিক সমূহ

(১) এটি সুন্নাত বিরোধী আমল। অতএব তা যত মিষ্ট ও সুন্দর মনে হোক না কেন সূরায়ে কাহফ-এর ১০৩-৪ নং আয়াতের মর্ম অনুযায়ী ঐ ব্যক্তির ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। 


(২) এর ফলে মুছল্লী স্বীয় ছালাতের চাইতে সালাতের বাইরের বিষয় অর্থাৎ প্রচলিত মুনাজাতকেই বেশী গুরুত্ব দেয়। আর এজন্যেই বর্তমানে মানুষ ফরয সালাতের চাইতে মুনাজাতকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আখেরী মুনাজাত নামক বিদআতী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেশি আগ্রহ বোধ করছে ও দলে দলে সেখানে ভিড় জমাচ্ছে। 


(৩) এর মন্দ পরিণতিতে একজন মুছল্লী সারা জীবন ছালাত আদায় করেও কোন কিছুর অর্থ শিখে না। বরং সালাত শেষে ইমামের মোনাজাতের মুখাপেক্ষী থাকে। 


(৪) ইমাম আরবী মুনাজাতে কী বললেন সে কিছুই বুঝতে পারে না। ওদিকে নিজেও কিছু বলতে পারে না। এর পূর্বে ছালাতের মধ্যে সে যে দো‘আগুলাে পড়েছে, অর্থ না জানার কারণে সেখানেও সে অন্তর ঢেলে দিতে পারেনি। ফলে জীবনভর ঐ মুসল্লির অবস্থা থাকে না ঘরকা না ঘাটকা। 


(৫) মুসল্লির মনের কথা ইমাম সাহেবের অজানা থাকার ফলে মুসল্লির কেবল ‘আমীন’ বলাই সার হয়। 


(৬) ইমাম ছাহেবের দীর্ঘক্ষণ ধরে আরবী-উর্দুবাংলায় বা অন্য ভাষায় করুণ সুরের মুনাজাতের মাধ্যমে শ্রোতা ও মুছল্লীদের মন জয় করা অন্যতম উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ফলে ‘রিয়া’ ও ‘শ্রুতি’-র কবীরা গােনাহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ‘রিয়া’-কে হাদিসে ছোট শিরক’ বলা হয়েছে। (আহমাদ, মিশকাত হা/৫৩৩৪) যার ফলে ইমাম ছাহেবের সমস্ত নেকী বরবাদ হয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.১১.৬. ছালাতে হাত তুলে সম্মিলিত দো’আ

(১) ইস্তিস্কা অর্থাৎ বৃষ্টি প্রার্থনার সালাতে ইমাম ও মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে দু’হাত তুলে দোয়া করবে। 


(২) কুনূতে নাযেলা ও ‘কুনুতে বিতরেও করবে। 


১৪.১১.৭. একাকী দু’হাত তুলে দো’আ

ছালাতের বাইরে যে কোন সময়ে বান্দা তার প্রভুর নিকটে যে কোন ভাষায় দো’আ করবে; তবে হাদীছের দো’আই উত্তম। বান্দা হাত তুলে একাকী নিরিবিলি কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তার হাত খালি ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। (আবু দাউদ, মিশকাত হা/২২৪৪) খােলা দুই হস্ততালু একত্রিত করে চেহারা বরাবর সামনে রেখে দুআ করবে। (আবু দাউদ হা/১৪৮৬-৮৭, ৮৯) দোয়া শেষে মুখ মাসেহ করার হাদিস যঈফ। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২২৪৩, ৪৫, ২২৫৫) বরং উঠানাে অবস্থায় দোয়া শেষে হাত ছেড়ে দেবে। 


(১) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) স্বীয় উম্মতের জন্য আল্লাহর নিকট হাত উঠিয়ে একাকী কেঁদে কেঁদে দো’আ করেছেন। (মুসলিম হা/৪৯৯)


(২) বদরের যুদ্ধের দিন তিনি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর নিকটে একাকী হাত তুলে কাতর কণ্ঠে দো’আ করেছিলেন। (মুসলিম হা/৪৫৮৮)


(৩) বনু জাযীমা গোত্রের কিছু লোক ভুলক্রমে নিহত হওয়ায় মর্মাহত হয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একাকী দুবার হাত উঠিয়ে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চেয়েছিলেন। (বুখারী, মিশকাত হা/৩৯৭৬)


(৪) আওতাস যুদ্ধে আবু মূসা আশআরী (রাঃ)-এর নিহত ভাতিজা দলনেতা আবু ‘আমের আশআরী (রাঃ)-এর জন্য ওযু করে দু’হাত তুলে একাকী দো’আ করেছিলেন। (বুখারী হা/৪৩২৩)


(৫) তিনি দাওস কওমের হেদায়েতের জন্য কিবলামুখী হয়ে একাকী দু’হাত তুলে দো’আ করেছেন। (বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৬১১)


(৬) হজ্জ ও ওমরাহ কালে সাঈ করার সময় সাফা পাহাড়ে উঠে কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে দু’হাত তুলে দোয়া করা। (আবু দাউদ হা/১৮৭২; মুসলিম, মিশকাত হা/২৫৫৫)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

(৭) আরাফার ময়দানে একাকী দু’হাত তুলে দো’আ করা। (নাসাঈ হা/৩০১১)

(৮) ১ম ও ২য় জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর একটু দূরে সরে গিয়ে কিবলামুখী হয়ে দুই হাত তুলে দোয়া করা। (বুখারী হা/১৭৫১-৫৩)


(৯) মুসাফির অবস্থায় হাত তুলে দোয়া করা। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০)


তাছাড়া জুমা ও ঈদায়নের খুতবায় বা অন্যান্য সভা ও সম্মেলনে একজন দো’আ করলে অন্যেরা (দু’হাত তােলা ছাড়াই) কেবল আমীন’ বলবেন। (ছহীহ আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৪৬১) এমনকি একজন দোয়া করলে অন্যজন সেই সাথে ‘আমীন’ বলতে পারেন। উল্লেখ্য যে, দোয়ার জন্য সর্বদা অজু করা, কিবলামুখী হওয়া এবং দু’হাত তােলা শর্ত নয়। বরং বান্দা যে কোন সময় যে কোন অবস্থায় আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করবে। যেমন খানাপিনা, পেশাব পায়খানা, বাড়ীতে ও সফরে সর্বদা বিভিন্ন দো’আ করা হয়ে থাকে। আর আল্লাহ যে কোন সময় যে কোন অবস্থায় তাঁকে আহ্বান করার জন্য বান্দার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। (বাক্বারাহ ২/১৮৬, মুমিন/গাফের ৪০/৬০; বুখারী ‘দো’আ সমূহ’ অধ্যায়-৮০, অনুচ্ছেদ-২৪)


১৪.১১.৮. কুরআনী দো’আ

রুকু ও সিজদাতে কুরআনী দো’আ পড়া নিষেধ আছে। (মিশকাত হাদিস ৮৭৩) তবে মর্ম ঠিক রেখে সামান্য শাব্দিক পরিবর্তনে পড়া যাবে। যেমন রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া … (বাক্বারাহ ২/২০১)-এর স্থলে আল্লা-হুম্মা রব্বানা আতিনা অথবা আল্লা-হুম্মা আ-তিনা ফিদ্ইয়া …বলা। (বুখারী হা/৪৫২২) অবশ্য শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে কুরআনী দো‘আ সহ ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক সকল প্রকার দো’আ পাঠ করা যাবে।


১৪.১২. মাসবুকের নামাজ

কেউ ইমামের সাথে সালাতের কিছু অংশ পেলে তাকে মাসবুক’ বলে। মুসল্লি ইমামকে যে অবস্থায় পাবে, সে অবস্থায় সালাতে যোগদান করবে। (তিরমিযী হা/৫৯১) ইমামের সাথে যে অংশটুকু পাবে, ওটুকুই তার সালাতের প্রথম অংশ হিসেবে গণ্য হবে। রুকু অবস্থায় পেলে স্রেফ সূরায়ে ফাতিহা পড়ে রুকুতে শরীক হবে। ছানা পড়তে হবে না। সূরায়ে ফাতিহা পড়তে না পারলে রাকাত গণনা করা হবে না। মুসাফির কোন মুকীমের ইক্তেদা করলে পুরা ছালাত আদায় করবে। অতএব রুকু, সিজদা, বৈঠক যে অবস্থায় ইমামকে পাওয়া যাবে, সেই অবস্থায় জামাতে যোগদান করবে। তাতে সে জামা’আতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবে। (মিশকাত হা/১১৪৫)


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, সালাতের যে অংশটুকু তোমরা পাও সেটুকু আদায় কর; এবং যেটুকু বাদ পড়ে, সেটুকু পূর্ণ কর। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮৬)


১৪.১৩. কাযা নামাজ

ক্বাযা ছালাত দ্রুত ও ধারাবাহিকভাবে ইকামত সহ আদায় করা বাঞ্ছনীয়। (মুসলিম হা/১৫৬০/৬৮০)


খন্দকের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সা) ও সাহাবীগণ মাগরিবের পর যােহর থেকে এশা পর্যন্ত চার ওয়াক্তের কাযা সালাত এক আযান ও চারটি পৃথক ইকামতে পর পর জামাত সহকারে আদায় করেন। (নাসাঈ হা/৬৬২)


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কেউ ভুলে গেলে অথবা ঘুমিয়ে গেলে তার কাফফারা হ’ল ঘুম ভাঙলে অথবা স্মরণে আসার সাথে সাথে কাযা সালাত আদায় করা। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬০৩-০৪)


উমরী কাযা অর্থাৎ বিগত বা অতীত জীবনের কাযা সালাত সমূহ বর্তমানে নিয়মিত ফরজ সালাতের সাথে যুক্ত করে কাযা হিসাবে আদায় করা সম্পূর্ণরূপে একটি বিদ’আতী প্রথা।


কেননা ইসলাম তার পূর্বের সবকিছুকে ধ্বসিয়ে দেয়। (মুসলিম, মিশকাত হা/২৮)


এবং খালেছ ভাবে তওবা করলে আল্লাহ তাঁর বান্দার বিগত সকল গুনাহ মাফ করে দেন। (আল-ফুরকান ২৫/৭১)


অতএব এমতাবস্থায় উচিত হবে, বেশি বেশি নফল ইবাদত করা; কেননা ফরজ ইবাদতের ঘাটতি হলে কিয়ামতের দিন আল্লাহর হুকুমে নফল ইবাদতের নেকী দ্বারা তা পূর্ণ করা হবে। (আবু দাউদ হা/৮৬৪-৬৬)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

১৪.১৪. কছর নামাজ পড়ার নিয়ম

সফর অথবা ভীতির সময়ে সালাতে কসর’ করার অনুমতি রয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন,


যখন তোমরা সফর কর, তখন তোমাদের সালাতে ‘কসর’ করায় কোন দোষ নেই; যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে; নিশ্চয়ই কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (নিসা ৪/১০১)


‘কসর’ অর্থ কমানো; পারিভাষিক অর্থে : চার রাকাত বিশিষ্ট সালাত দুই রাকাত করে পড়াকে ‘কসর’ বলে; মক্কা বিজয়ের সফরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কছরের সাথে সালাত আদায় করেন। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৩৬) 


শান্তিপূর্ণ সফরে কসর করতে হবে কি-না এ সম্পর্কে ওমর ফারুক (রাঃ)-এর এক প্রশ্নের জবাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন; আল্লাহ এটিকে তোমাদের জন্য ছাদাক্বা (উপঢৌকন) হিসাবে প্রদান করেছেন; অতএব তোমরা তা গ্রহণ কর। (মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৩৫)


সফর অবশ্যই আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের সফর হতে হবে, গুনাহের সফর নয়।


সফরের দূরত্ব

সফরের দূরত্বের ব্যাপারে বিদ্বান গণের মধ্যে এক মাইল হ’তে ৪৮ মাইলের বিশ প্রকার বক্তব্য রয়েছে। (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৬৩)পবিত্র কুরআনে দূরত্বের কোন ব্যাখ্যা নেই। কেবল সফরের কথা আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকেও এর কোন সীমা নির্দেশ করা হয়নি।৮৫২ অতএব সফর হিসাবে গণ্য করা যায়, এরূপ সফরে বের হলে নিজ বাসস্থান থেকে বেরিয়ে কিছুদূর গেলেই ‘কৃছর’ করা যায়। কোন কোন বিদ্বানের নিকটে সফরের নিয়ত করলে ঘর থেকেই ‘কসর’ শুরু করা যায়।


তবে ইবনুল মুনযির বলেন যে, সফরের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনা শহর ছেড়ে বের হয়ে যাওয়ার পূর্বে কসর’ করেছেন বলে আমি জানতে পারিনি। তিনি বলেন, বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন যে, সফরের নিয়তে বের হয়ে নিজ গ্রাম (বা মহল্লার) বাড়ি সমূহ অতিক্রম করলেই তিনি কসর করতে পারেন। আমরা মনে করি যে, মতভেদ এড়ানোর জন্য ঘর থেকেই দু’ওয়াক্তের ফরয ছালাত কছর ও সুন্নাত ছাড়াই পৃথক দুই ইকামতের মাধ্যমে জমা করে সফরে বের হওয়া ভাল। তাবুক অভিযানে রাসূল (সা) ও সাহাবীগণ এটা করেছিলেন। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৪৪) 


আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ১৯ দিন (মক্কা বিজয় অথবা তাবুক অভিযানে) অবস্থানকালে ‘কসর’ করেছেন; আমরাও তাই করি। তার বেশি হলে পুরা করি। (বুখারী ১/১৪৭, হা/৪২৯৮)


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

যদি কারু সফরের মেয়াদ নির্দিষ্ট থাকে, তথাপি তিনি কুছর’ করবেন, যতক্ষণ না তিনি সেখানে স্থায়ী বসবাসের সংকল্প করেন।

সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় ১৯ দিনের বেশি হলেও ‘কসর’ করা যায়; রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাবুক অভিযানের সময় সেখানে ২০ দিন যাবত কিছু’ করেন; আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) আজারবাইজান সফরে গেলে পুরা বরফের মৌসুমে সেখানে আটকে যান ও ছ মাস যাবৎ কসরের সাথে সালাত আদায় করেন; অনুরূপভাবে হযরত আনাস (রাঃ) শাম বা সিরিয়া সফরে এসে দু’বছর সেখানে থাকেন ও কসর করেন।


অতএব স্থায়ী মুসাফির যেমন জাহা, বিমান, ট্রেন, বাস ইত্যাদি চালক ও কর্মচারীগণ সফর অবস্থায় সর্বদা সালাতে কসর করতে পারেন; এবং তারা দুই ওয়াক্তের সালাত জমা ও কসর করতে পারেন; মোটকথা ভীতি ও সফর অবস্থায় কসর’ করা উত্তম; রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সফরে সর্বদা কসর করতেন; হযরত ওমর, আলী, ইবনে মাসউদ, ইবনে আব্বাস (রাঃ) প্রমুখ সফরে কসর করাকেই অগ্রাধিকার দিতেন।


হযরত ওসমান ও হযরত আয়েশা (রাঃ) প্রথম দিকে কসর করতেন ও পরে পুরা পড়তেন; আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) জামাতে পুরা পড়তেন ও একাকী কসর করতেন। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৪৭-৪৮)


কেননা আল্লাহ বলেন, ‘সফর অবস্থায় সালাতে ‘কসর’ করলে তোমাদের জন্য কোন গােনাহ নেই। (নিসা ৪/১০১)।


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

নামাজ জমা ও কসর করা

সফরে থাকা অবস্থায় যোহর-আছর (২+২=৪ রাকাত) ও মাগরিব-এশা (৩+২=৫ রাকাত) পৃথক ইকামতের মাধ্যমে সুন্নত ও নফল ছাড়াই জমা ও কসর করে তাকদীম ও তাখীর দু’ভাবে পড়ার নিয়ম রয়েছে। (বুখারী, মিশকাত হা/১৩৩৯)


অর্থাৎ শেষের ওয়াক্তের সালাত আগের ওয়াক্তের সাথে ‘তাকদীম’ করে অথবা আগের ওয়াক্তের সালাত শেষের ওয়াক্তের সাথে তাখির’ করে একত্রে পড়বে; ভীতি ও ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াও অন্য কোন বিশেষ শারঈ ওজর বশত মুক্বীম অবস্থায় দু’ওয়াক্তের ছালাত কৃছর ও সুন্নাত ছাড়াই একত্রে জমা করে পড়া যায়। যেমন যোহর ও আছর পৃথক একামতের মাধ্যমে ৪+৪=৮ এবং মাগরিব ও এশা অনুরূপভাবে ৩+৪=৭ রাকাত। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল এটা কেন? তিনি বললেন, যাতে উম্মতের কষ্ট না হয়। (বুখারী হা/১১৭৪)


ইস্তিহাযা বা প্রদর রোগগ্রস্ত মহিলা ও বহুমূত্র রোগী বা অন্যান্য কঠিন রোগী, বাবুর্চি এবং কর্মব্যস্ত ভাই-বোনেরা মাঝে-মধ্যে বিশেষ ওজর বশত সাময়িকভাবে এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। হজ্জের সফরে আরাফাতের ময়দানে কোনরূপ সুন্নত-নফল ছাড়াই যোহর ও আছর একত্রে (২+২) জোহরের আউয়াল ওয়াক্তে পৃথক ইকামতে জমা তাকদীম’ করে এবং মুযদালিফায় মাগরিব ও এশা একত্রে (৩+২) এশার সময় পৃথক ইকামতে ‘জমা তাখীর’ করে জামাতের সাথে অথবা একাকী পড়তে হয়। (বুখারী, মিশকাত হা/২৬১৭, ২৬০৭)


সফরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সুন্নাত সমূহ পড়তেন না; (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৩৮) অবশ্য বিতর, তাহাজ্জুদ ও ফজরের দুই রাকাত সুন্নত ছাড়তেন না; তবে সাধারণ নফল সালাত যেমন তাহিয়্যাতুল ওযু, তাহিয়্যাতুল মাসজিদ ইত্যাদি আদায়ে তিনি কাউকে নিষেধ করতেন না। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৪০; বুখারী হা/১১৫৯)


১৫. তারাবীহ নামাজ

১৬. তাহাজ্জুদ নামাজ

১৭. ঈদের নামাজ

নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

Tags: নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, সালাত অর্থ কি, নামাজের ফজিলত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত, নামাজের গুরুত্ব, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, সালাতের গুরুত্ব, নামাজ না পড়ার শাস্তি, নামাজের রাকাত, নামাজ কত রাকাত, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, ৫ ওয়াক্ত নামাজের রাকাত, নামাজের নিষিদ্ধ সময়, নামাজের ফরজ কয়টি, নামাজের নিয়ত, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত, নামাজ শিক্ষা, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজের নিয়ম, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ,


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

জায়নামাজের দোয়া, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়মাবলী, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজের উপকারিতা, নামাজের নিয়ম ও দোয়া, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজে সূরা মিলানোর নিয়ম, নামাজ সম্পর্কিত হাদিস, নামাজের নিয়ম, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম কানুন, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামায শিক্ষা, নামাযের নিয়ম, নামাজের দোয়া, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ শিক্ষা, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ,


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

ফরজ নামাজের পর দোয়া, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের দোয়া সমূহ, নামাজের দোয়া, নামাজের সুরা, নামাজের সূরা সমূহ, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, ফজরের নামাজের ফজিলত, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, ফজরের নামাজের নিয়ম, যোহরের নামাজ কয় রাকাত, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, যোহরের নামাজ কত রাকাত, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, জোহরের নামাজের নিয়ম,


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

আসরের নামাজ কয় রাকাত, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম, মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত, এশার নামাজের নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, এশার নামাজ কয় রাকাত, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, এশার নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, এশার নামাজের শেষ সময়, এশার নামাজের ওয়াক্ত, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, মহিলাদের নামাজের নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ শিক্ষা, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ,


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

কছর নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের সঠিক নিয়ম, নামাজের নিয়ম অর্থ সহ, নামাজের সঠিক নিয়ম, সঠিক নামাজের নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম ও দোয়া, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজ পড়ার নিয়ম ও সূরা, নামাজ পড়ার দোয়া, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজের নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, সঠিক নামাজ পড়ার নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজের সঠিক নিয়ম কানুন, ফজর নামাজ কয় রাকাত, নামাজের নিয়ম ও সূরা, সালাতের নিয়ম,


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, সঠিক ভাবে সালাত আদায়ের নিয়ম, নামাজের সঠিক পদ্ধতি, নামাজের নিয়ম কারণ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজের শেষ বৈঠকের দোয়া সমূহ, নামাজের দোয়া ও নিয়ম, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, আছরের নামাজ কত রাকাত, কছর নামাজের নিয়ম, নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ, নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস, নামাজ শিক্ষা, 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

namaj porar niom, namaz porar niom, namaz porar niom bangla, namajer sothik niom, namaj porar niom bangla, namaj porar dua, namaz porar niyom, namaj porar niyom, namaj hadis bangla, salater niyom, namazer sothik niyom, namajer niyom, 


নামাজের নিয়ম ও দোয়া সমূহ. নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম সহীহ হাদিস. Namaz porar niom

নামাজের দোয়া ও সূরা (বাংলা অনুবাদসহ) – EduDaily24


নামাজ পড়বেন যেভাবে – Jagonews24


নামাজ আদায় করার সঠিক নিয়ম – al-feqh


জেনে নিন নামাজ পড়ার সংক্ষিপ্ত নিয়ম | 887443 | কালের কণ্ঠ


২০+ নামাজের নিয়ম – পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়ার নিয়ম ছবিসহ – Ordinary


নামাজের নিয়মাবলী : পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার নিয়ম – Chatrobarta

Monday, March 6, 2023

সুদ

 সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ২৭৫


اَلَّذِیۡنَ یَاۡکُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَقُوۡمُ الَّذِیۡ یَتَخَبَّطُہُ الشَّیۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَیۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَاَحَلَّ اللّٰہُ الۡبَیۡعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنۡ جَآءَہٗ مَوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ فَانۡتَہٰی فَلَہٗ مَا سَلَفَ ؕ وَاَمۡرُہٗۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ وَمَنۡ عَادَ فَاُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ

উচ্চারণঃ আল্লাযীনা ইয়া’কুলুনার রিবা-লা-ইয়াকূমূনা ইল্লা-কামা-ইয়াকূমুল্লাযী ইয়াতাখাব্বাতুহুশশাইতা-নুমিনাল মাছছি যা-লিকা বিআন্নাহুম কা-লূ ইন্নামাল বাই‘উ মিছলূর রিবা-। ওয়া আহাল্লাল্লা-হুল বাই‘আ ওয়া হাররামার রিবা-ফামান জাআহু মাওইজাতুম মির রাব্বিহী ফানতাহা-ফালাহু মা-ছালাফা ওয়া আমরুহু ইলাল্লা-হি ওয়া মান ‘আ-দা ফাউলাইকা আসহা-বুন্না-রি হুম ফীহা-খা-লিদূ ন।

অর্থঃ যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla


সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ২৭৬

یَمۡحَقُ اللّٰہُ الرِّبٰوا وَیُرۡبِی الصَّدَقٰتِ ؕ وَاللّٰہُ لَا یُحِبُّ کُلَّ کَفَّارٍ اَثِیۡمٍ

উচ্চারণঃ ইয়ামহাকুল্লা-হুর রিবা-ওয়া ইউরবিসসাদাকা-তি ওয়াল্লা-হু লা-ইউহিব্বু কুল্লা কাফফা-রিন আছীম।

অর্থঃ আল্লাহ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla


সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ২৭৮

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰہَ وَذَرُوۡا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ

উচ্চারণঃ ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানুত্তাকুল্লা-হা ওয়াযারু মা-বাকিয়া মিনার রিবাইন কুনতুম মু’মিনীন।

অর্থঃ হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla


সূরা আল ইমরান (آل عمران), আয়াত: ১৩০

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوا الرِّبٰۤوا اَضۡعَافًا مُّضٰعَفَۃً ۪  وَاتَّقُوا اللّٰہَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ۚ

উচ্চারণঃ ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূলা-তা’কুলুর রিবা-আদ‘আ-ফাম মু দা-‘আফাতাওঁ ওয়াত্তাকুল্লা-হা লা‘আল্লাকুম তুফলিহূন।

অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla


সূরা আন নিসা (النّساء), আয়াত: ১৬১

وَّاَخۡذِہِمُ الرِّبٰوا وَقَدۡ نُہُوۡا عَنۡہُ وَاَکۡلِہِمۡ اَمۡوَالَ النَّاسِ بِالۡبَاطِلِ ؕ وَاَعۡتَدۡنَا لِلۡکٰفِرِیۡنَ مِنۡہُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا

উচ্চারণঃ ওয়া আখযিহিমুর রিবা-ওয়া কাদ নুহু ‘আনহু ওয়া আকলিহিম আমওয়া-লান্না-ছি বিল বাতিলি ওয়াআ‘তাদনা-লিল কা-ফিরীনা মিনহুম ‘আযা-বান আলীমা-।

অর্থঃ আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla


সূরা আর রুম (الرّوم), আয়াত: ৩৯

وَمَاۤ اٰتَیۡتُمۡ مِّنۡ رِّبًا لِّیَرۡبُوَا۠ فِیۡۤ اَمۡوَالِ النَّاسِ فَلَا یَرۡبُوۡا عِنۡدَ اللّٰہِ ۚ وَمَاۤ اٰتَیۡتُمۡ مِّنۡ زَکٰوۃٍ تُرِیۡدُوۡنَ وَجۡہَ اللّٰہِ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُضۡعِفُوۡنَ

উচ্চারণঃ ওয়ামাআ-তাইতুম মির রিবাল লিয়ারবুওয়া ফীআমওয়া-লিন্না-ছি ফালা-ইয়ারবূ‘ইনদাল্লা-হি ওয়ামাআ-তাইতুম মিন ঝাকা-তিন তুরীদূ না ওয়াজহাল্লা-হি ফাউলাইকা হুমুল মু দ‘ইফূন।

অর্থঃ মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এই আশায় তোমরা সুদে যা কিছু দাও, আল্লাহর কাছে তা বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পবিত্র অন্তরে যারা দিয়ে থাকে, অতএব, তারাই দ্বিগুণ লাভ করে।

Playstore Link:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.muslim.quran_bangla



আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ أُمَّهُ

সুদের গুনাহর সত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মাকে বিবাহ (যেনা) করা। (ইবনু মাজাহ ২২৭৪)

অপর হাদিসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবন হানযালা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً

জেনে-শুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ৩৬ জন নারীর সাথে ব্যভিচারের চাইতে অধিক গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমাদ ২১৪৫০)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَشَاهِدَهُ وَكَاتِبَهُ ‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি (‘আবদুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের সাক্ষী ও এর দলীল লেখক সবাইকে অভিশম্পাত করেছেন।
সহীহ : ইবনু মাজাহ (২২৭৭)।
  

সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৩৩৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD